কোলোরেক্টাল ক্যান্সার: আপনার জানা দরকার কেন?

আপনি কি জানেন?
সারা বিশ্বে পুরুষ এবং মহিলাদের মিলিয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্যান্সার মৃত্যুর কারণ হচ্ছে কোলোরেক্টাল ক্যান্সার।
এর ভয়াবহতা এই যে, শুরুতে ধরা পড়া খুব কঠিন
কিন্তু সুখবর হচ্ছে — যদি প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়ে, সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা ৯০% পর্যন্ত!

 

তাহলে কোলোরেক্টাল ক্যান্সার কী?

কোলোরেক্টাল ক্যান্সার মানে হচ্ছে বৃহদান্ত্র (large intestine) বা রেকটাম (rectum)-এর ক্যান্সার।

আমাদের পেটের ভিতর রয়েছে দীর্ঘ একটি পথ — এটাকেই বলা হয় গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল সিস্টেম
এর মধ্যে প্রথম অংশ হলো ক্ষুদ্রান্ত্র, আর হলুদ অংশটি বৃহদান্ত্র
বৃহদান্ত্র আবার ভাগ হয়ে যায়:

  • Ascending colon
  • Transverse colon
  • Descending colon
  • Sigmoid colon
  • এবং শেষে রেকটাম

এই যেকোনো অংশে ক্যান্সার হতে পারে।

 

ঝুঁকির কারণগুলো কী কী?

কিছু গুরুত্বপূর্ণ রিস্ক ফ্যাক্টর রয়েছে:

বয়স — বয়স বাড়লে ঝুঁকিও বাড়ে
ইনফ্ল্যামেটরি বাওয়েল ডিজিজ — যেমন ক্রোনস ডিজিজ বা আলসারেটিভ কোলাইটিস
পারিবারিক ইতিহাস — যদি পরিবারের কারো কোলোরেক্টাল ক্যান্সার বা পলিপ থাকে
জেনেটিক কারণ — যেমন Lynch Syndrome, Familial Adenomatous Polyposis
জীবনধারা

  • কম ফাইবার, বেশি ফ্যাটযুক্ত খাবার
  • কম ফল ও শাকসবজি খাওয়া
  • শারীরিক ব্যায়ামের অভাব
  • ধূমপান ও অ্যালকোহল গ্রহণ

 

লক্ষণ সতর্কতা সংকেত

🟠 পায়খানার স্বাভাবিক অভ্যাসে পরিবর্তন — অনেকদিন ধরে কনস্টিপেশন বা ডায়রিয়া
🟠 পায়খানা করার সময় অস্বস্তি, বাকি থেকে যাওয়ার অনুভূতি
🟠 পায়খানার আকার সরু হয়ে যাওয়া — অনেক সময় এটি পেন্সিলের মতো হয়
🟠 পায়খানায় রক্ত — লাল, বাদামি বা কালচে
🟠 পেটে ব্যথা, গ্যাস বা ফাঁপা ভাব
🟠 অজানা কারণেই রক্তশূন্যতা (অ্যানিমিয়া)
🟠 হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া
🟠 বমি, জ্বর বা টেনেসমাস (পায়খানা করার ইচ্ছে বারবার হলেও পুরোটা না হওয়া)

 

অ্যাডভান্সড স্টেজে লক্ষণগুলো হতে পারে:

🟣 লিভারে ছড়িয়ে পড়লে — জন্ডিস, লিভার ফুলে যাওয়া
🟣 ফুসফুসে ছড়ালে — শ্বাসকষ্ট
🟣 লসিকাগ্রন্থিতে ছড়ালে — গলার ওপরে গিঁট বা সাঁজবাজ

 

তাহলে করণীয় কী?

👉 স্ক্রিনিং টেস্ট করানো খুবই জরুরি — বিশেষ করে যাদের বয়স ৫০ পেরিয়েছে বা পরিবারের ইতিহাস আছে
👉 পলিপ আগে থেকেই ধরা পড়লে ক্যান্সার হওয়ার আগেই সরানো সম্ভব
👉 লক্ষণ দেখা দিলে সময় নষ্ট না করে চিকিৎসকের কাছে যান

 

 

কোলোরেক্টাল ক্যান্সার নিরব ঘাতক হতে পারে।
কিন্তু সচেতনতা, নিয়মিত পরীক্ষা আর স্বাস্থ্যকর জীবনচর্চা আপনাকে অনেকটা নিরাপদ রাখতে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *