স্তন ক্যান্সার বাংলাদেশসহ তাবৎ বিশ্বের একটি বড় স্বাস্থ্য সমস্যা। বিশেষ করে যখন এটি BRCA1 বা BRCA2 জিন মিউটেশনের কারণে হয়, তখন এটি খুব দ্রুত বাড়তে থাকে এবং চিকিৎসা করা কঠিন হয়ে পড়ে। তবে সম্প্রতি ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা একটি নতুন চিকিৎসা কৌশল আবিষ্কার করেছেন, যা স্তন ক্যান্সারের চিকিৎসায় আশ্চর্যজনক ফলাফল দিয়েছে। এই নতুন কৌশলটি রোগীদের জন্য খুবই কার্যকরী প্রমাণিত হয়েছে।
কী সেই কৌশল?
গবেষকরা কেমোথেরাপি এবং একটি বিশেষ টার্গেটেড ড্রাগ, ওলাপারিব (Olaparib), একসাথে ব্যবহার করেছেন। তবে, এখানে সঠিক সময়ে ব্যবহারের বিষয়টি ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কেমোথেরাপি এবং ওলাপারিবের মধ্যে ৪৮ ঘণ্টার বিরতি রাখা হয়েছিল, যাতে রোগীদের বোনম্যারো সেরে উঠতে পারে, আর ক্যান্সার কোষগুলো দুর্বল থাকে। এর ফলে, ৩৯ জন মহিলার মধ্যে সবাই অন্তত তিন বছর বেঁচে ছিলেন, এবং কেবল একজনের ক্যান্সার আবার ফিরে এসেছিল। অন্যদিকে, যারা শুধু কেমোথেরাপি পেয়েছিলেন, তাদের মধ্যে ৯ জন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং ৬ জন মারা গিয়েছিলেন।
গবেষকরা মনে করেন, এই সঠিক সময়ে ব্যবধান রাখার ফলে চিকিৎসাটি আরও কার্যকর এবং নিরাপদ হয়েছে। এই নতুন কৌশলটি কেবল স্তন ক্যান্সারের ক্ষেত্রেই নয়, বরং BRCA সম্পর্কিত অন্যান্য ক্যান্সার, যেমন ডিম্বাশয় এবং প্রোস্টেট ক্যান্সারের ক্ষেত্রেও কার্যকর হতে পারে। এটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ কারণ, বাংলাদেশের মতো দেশে যেখানে চিকিৎসা খরচ অনেক সময় এত বেশি হয়ে যায় যে চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়াই অসম্ভব হয়ে পড়ে, সেখানে এই কৌশলটি রোগী এবং চিকিৎসকদের জন্য কার্যকরী ও সাশ্রয়ী হতে পারে।
স্তন ক্যান্সার বিভিন্ন কারণে হতে পারে—জেনেটিক, হরমোনাল এবং জীবনযাত্রার কারণে। কিন্তু এই নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে, যা আশার বার্তা নিয়ে হাজির হয়েছে। সঠিক সময়ে এবং সঠিক চিকিৎসা দিয়ে এই কঠিন রোগটিকে জয় করা সম্ভব হতে পারে।