ক্যান্সার সম্পর্কিত এক ডজন চমকপ্রদ ও তথ্যে ভরপুর বিষয় নিয়ে আজকের লেখা—যা হয়তো অনেকেই জানেন না। চলুন জেনে নেই।
১. ক্যান্সার মানেই মৃত্যু নয়
বর্তমানে উন্নত চিকিৎসা পদ্ধতি ও দ্রুত শনাক্তকরণের ফলে বহু ক্যান্সার রোগী সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবন যাপন করছেন। অনেক ধরনের ক্যান্সার এখন সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য।
২. সব ধরণের টিউমার ক্যান্সার নয়
টিউমার মানেই ক্যান্সার নয়। অনেক সময় টিউমার হয় “বিনাইন” বা নিরীহ প্রকৃতির, যা ক্যান্সার নয় এবং ছড়ায়ও না।
৩. তামাকই সবচেয়ে বড় কারণ
বিশ্বে ক্যান্সারজনিত মৃত্যুর সবচেয়ে বড় কারণ তামাক। শুধু ধূমপান নয়, জর্দা, খৈনি, গুলসহ সব তামাকজাত দ্রব্যই মারাত্মক ক্ষতিকর।
৪. পুরুষ ও নারীদের ক্যান্সারের ধরণ ভিন্ন
পুরুষদের ক্ষেত্রে সবচেয়ে সাধারণ ক্যান্সার হচ্ছে ফুসফুস, খাদ্যনালী, পাকস্থলী, স্বরযন্ত্র ও রেক্টাল ক্যান্সার। আর নারীদের ক্ষেত্রে স্তন, জরায়ুমুখ, ফুসফুস, মুখ ও গলবিলের ক্যান্সার এবং পাকস্থলীর ক্যান্সার বেশি দেখা যায় (জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের ক্যান্সার রেজিস্ট্রি রিপোর্ট ২০১৮-২০২০ এর তথ্যানুযায়ী)।
৫. দীর্ঘদিন সূর্যের আলোও বিপজ্জনক হতে পারে
অতিরিক্ত সময় ধরে রোদে থাকার ফলে ত্বকে ক্ষতিকর UV রশ্মি পড়ে, যা স্কিন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
৬. হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (HPV) হতে পারে ক্যান্সারের কারণ
HPV ভাইরাসটি জরায়ুমুখ ক্যান্সারের অন্যতম প্রধান কারণ। তবে টিকা নেওয়ার মাধ্যমে এটি প্রতিরোধযোগ্য।
৭. জেনেটিক বা বংশগত কারণেও ক্যান্সার হতে পারে
পরিবারে যদি ক্যান্সারের ইতিহাস থাকে, তাহলে নির্দিষ্ট ধরণের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। নিয়মিত স্ক্রিনিং জরুরি।
৮. ওজন ও খাদ্যাভ্যাসও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে
অতিরিক্ত ওজন ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস কোলন, স্তন ও জরায়ুর মতো ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
৯. শরীরের অজানা পরিবর্তনগুলো অবহেলা করবেন না
ওজন হ্রাস, ক্লান্তি, অজানা ব্যথা, রক্তপাত ইত্যাদি উপসর্গ অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
১০. শুধু বড় শহরে নয়, গ্রামেও ক্যান্সার বাড়ছে
খাদ্যে ভেজাল, তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার এবং স্বাস্থ্য সচেতনতার অভাবে এখন গ্রামাঞ্চলেও ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
১১. সুস্থ জীবনযাপন ক্যান্সার প্রতিরোধে কার্যকর
সুষম খাদ্য, ব্যায়াম, পর্যাপ্ত ঘুম এবং মানসিক চাপ কমানো—এসবই ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
১২. বিশ্ব ক্যান্সার দিবস পালিত হয় ৪ ফেব্রুয়ারি
এই দিনে মানুষকে সচেতন করতে বিশ্বজুড়ে প্রচারণা ও শিক্ষা কার্যক্রম চালানো হয়, যাতে সময়মতো রোগ শনাক্ত ও চিকিৎসা নিশ্চিত হয়।
=========================================================================
🎗 সচেতনতাই প্রথম প্রতিরোধ
আপনি বা আপনার প্রিয়জন যদি উপরের কোনো উপসর্গ বা ঝুঁকির মধ্যে থাকেন, তবে দেরি না করে একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। মনে রাখবেন, সময়মতো শনাক্ত হলে ক্যান্সারকে জয় করাও সম্ভব।